তীব্র গরমের ফলে নারায়ণগঞ্জে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।
জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে। হাসপাতাল ঘুরে জানা গেছে, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গত কয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাদের মধ্যে শিশু রোগির সংখ্যাই বেশি। প্রচন্ড গরমের কারণে রমজান মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নারায়ণগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। রোগি ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকে। তবে ঈদুল ফিতরের আগের দিন থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার মারাত্বক আকার ধারণ করেছে।
হাসপাতালের রেজিষ্টার সূত্রে জানা গেছে, ২৮ এপ্রিল বিকাল পর্যন্ত ৪১ জন রোগী, ২৭ এপ্রিল ৮৯ জন, ২৬ এপ্রিল ১১৪ জন, ২৫ এপ্রিল ১২৫, ২৪ এপ্রিল ১৪২, ২৩ এপ্রিল ১৮৬, ২২ এপ্রিল ৯০, ২১ এপ্রিল ৭৮ জন, ২০ এপ্রিল ৮৩, ১৯ ও ১৮ এপ্রিল ১০৭ জন, ১৭ এপ্রিল ৯২ জন, ১৬ এপ্রিল ৮৭, ১৫ এপ্রিল ১৩৭ জন, ১৪ এপ্রিল ৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত নার্স ও সংশ্লিষ্টরা জানান, এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ১০০ থেকে ১২০ জন রোগি ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছেন। জরুরি বিভাগে রোগিদের ভীড় বাড়ছে। সেখান থেকে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দিয়ে রোগিদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর, গুরুতর রোগিদের ভর্তি করে পাঠানো হচ্ছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। চিকিৎসার পর রোগির অবস্থা ভালো হলে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমানে স্যালাইন, ইনজেকশন ও ঔষধ মজুদ থাকলেও মাত্র ১০ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এতো রোগির চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. গোলাম মোস্তফা জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়ার তারতম্য ও ঈদ উপলক্ষে খাবারের পরিবর্তন হওয়ায় এতো মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে সবাই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ, স্যালাইন ও ইনজেকশন মজুদ আছে। কোন রোগিকে ঢাকায় কলেরা হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন পড়েনি। এখানেই যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের এই চিকিৎসক।
নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শেখ ফরহাদ বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সকল রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।