সশস্ত্র সঙ্গী নিয়ে ব্যাপক শোডাউনের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এবং বন্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। আগামীকাল শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর)) সকাল ১০টায় সশরীরে এসে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে ওই প্রার্থীকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পেশকার ইবনে সাউদ।

তিনি জানান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায় সশস্ত্র কর্মী ও বিপুল সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন।

পেশকার সাউদ আরও জানান, নির্বাচন আচরণবিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮ (খ) ও ১১ (ঘ) ধারামোতাবেক নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি শেখ আনিসুজ্জাম স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ সংশ্লিষ্ট ওই প্রার্থীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে শুক্রবার তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে বুধবার (২৯ নভেম্বর) মন্ত্রী গাজীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় মিছিলের অগ্রভাগে থাকা লাল টিশার্ট পড়া ব্যক্তির প্রদর্শিত অস্ত্রটি রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জব্দ করেছে। পরে লাইসেন্স বাতিলের জন্য আবেদন করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ।

উল্লেখ্য, সোমবার (২৯ নভেম্বর) কয়েকশ নেতাকর্মীর মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। ওই সময় তার কর্মী-সমর্থকদের মিছিলে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে গোলাম দস্তগীর গাজীর সমর্থনে মুড়াপাড়া এলাকা থেকে উপজেলা পরিষদ ভবন অভিমুখে কয়েকশ নেতাকর্মীর মিছিল বের হয়। এই মিছিলের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি। ওই মিছিলের অগ্রভাগে এক ব্যক্তিকে তার কাঁধে শটগান ঝুলিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তি গোলাম রসুল কলির ব্যক্তিগত দেহরক্ষী।

যোগাযোগ করা হলে গোলাম রসুলও বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অস্ত্রধারী ওই ব্যক্তির নাম মো. জামান। তিনি তার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। শটগানটি জামানের নামে লাইসেন্স করা।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ফয়সাল হক বলেন, শুধু নির্বাচন চলাকালীন নয়, কোনো সময়ই লাইসেন্সধারী ব্যক্তিও তার অস্ত্র প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে পারবেন না। এই নীতিমালাবহির্ভূত। এই বিষয়ে আমরা শুনেছি। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ কেউ এখন পর্যন্ত করেনি। যদিও অস্ত্রের ব্যাপারগুলোতে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।